Sunday, March 29, 2015

বাংলাদেশকে বঞ্চিত করে শ্রীনির ‘প্রতিশোধ’

আইসিসির সভাপতি হিসেবে  আ হ ম মুস্তফা কামালের চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়কের হাতে ট্রফি তুলে দেওয়ার কথা থাকলেও কাল কিনা সেটি দিলেন তাঁর অধস্তন আইসিসির চেয়ারম্যান এন শ্রীনিবাসন।

ভারতের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশের বাজে আম্পায়ারিংয়ের শিকার হওয়া নিয়ে সোচ্চার হওয়ার জেরেই যে এমনটা হলো, তা নিয়ে কোনো সংশয়ই আর নেই।

১৯ মার্চ মেলবোর্নের কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। ম্যাচে ভারতীয় ওপেনার রোহিত শর্মার আউট হওয়া বলে ‘নো’ ডাকাসহ আম্পায়ারদের বেশ কয়েকটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত যায় বাংলাদেশের বিপক্ষে। এ নিয়ে সাধারণ ক্রিকেট সমর্থক থেকে শুরু করে বড় বড় ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ, এমনকি সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটাররাও আম্পায়ারিংয়ের সমালোচনা করেছেন। আম্পায়ারদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেশি-বিদেশি সংবাদমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুস্তফা কামালও। কাল মেলবোর্নের আলোকিত মঞ্চে তাঁর অনুপস্থিতির সবচেয়ে বড় কারণ মনে করা হচ্ছে আইসিসি সভাপতি হয়েও দেশের পক্ষে নেওয়া ওই অবস্থানটাকেই।

গত পরশু মেলবোর্নে শ্রীনিবাসনের ডাকা অনানুষ্ঠানিক এক সভায় 'দায়িত্বজ্ঞানহীন' বক্তব্যের জন্য কামালের হাতে কারণ দর্শানোর নোটিশও ধরিয়ে দেওয়া হয়। তখনই নিশ্চিত হয়ে যায় যে পরদিন তাঁকে দিয়ে ট্রফি দেওয়ানো হচ্ছে না। তাই ফাইনাল শেষ হওয়ার ৫-৬ ওভার আগেই এমসিজি থেকে বেরিয়ে পড়েন কামাল। বেরিয়ে যাওয়ার সময় তিনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথাও জানিয়ে যান উপস্থিত সংবাদমাধ্যমকে, 'ক্রিকেটে এই প্রথমবার সংবিধান লঙ্ঘিত হলো। ক্রিকেটকে এই জায়গা থেকে মুক্ত করতে হবে। এ জন্য আমি লড়ে যাব।


কিভাবে? সে প্রশ্নের জবাবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ারও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি, 'আইসিসির ভেতরে হচ্ছেটা কী, সারা বিশ্বের তা জানা উচিত। আমি দেশে ফিরে গিয়ে সব জানাব। আমার আইনজীবীদের সঙ্গেও কথা বলে করণীয় ঠিক করতে হবে।' ট্রফি দিতে না পারার হতাশা চেপে কামাল বলেছেন, 'যারা আজ ট্রফি দিয়েছে, তারা কিন্তু ওপরে ওঠেনি। ওপরে উঠেছি আমি।' কারণ তিনি অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছিলেন, 'দেশের পক্ষে কথা বলার জন্য আমি আজ পুরস্কার দিতে পারিনি। হতে পারি আমি আইসিসি সভাপতি। কিন্তু আমিও তো মানুষ। আবেগ-অনুভূতি আমারও আছে। দেশের প্রতি অবিচার হয়েছে বলেই আমি সেদিন কিছু কথা বলেছিলাম।'

সেসব কথায় আইসিসির শীর্ষমহল ভীষণ চটলেও কামাল নিজের বক্তব্যে এখনো অটল। বিশেষ করে তাঁর মুখে আইসিসির নাম ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল উচ্চারিত হওয়া নিয়ে বললেন, 'আমি সেদিন স্টেডিয়ামে অনেক প্ল্যাকার্ডে লেখা দেখেছি ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল। সে কথাই আমি ওদের বলেছি। আমি তো আইসিসির সভাপতি, ভারতের নই। এখন আইসিসি যদি ভারতেরই হয়, তাহলে তো আমার পদত্যাগই করা উচিত।' তাঁর প্রশ্ন, 'বাংলাদেশের সঙ্গে ম্যাচে বিগ স্ক্রিনে দেখাল, জিতেগা ভাই জিতেগা ইন্ডিয়া জিতেগা। তাহলে অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে দেখাল না কেন? এত এত ক্যামেরা, সেগুলো ওই দিন কোথায় ছিল?' তাঁকে দিয়ে ট্রফি না দেওয়ানোর চক্রান্তও অনেক আগেই টের পেয়েছিলেন বলেও দাবি করলেন কামাল, 'এটা ওদের পূর্বপরিকল্পনা। আমিও জানতাম। এবার সুযোগ পেয়ে ওরা সেটা কাজে লাগাল।'

সুত্রঃ বান

No comments:

Post a Comment